সব মায়েরাই সুপার গার্ল, ওয়ান্ডার ওম্যান

সন্তান জন্মদানের প্রক্রিয়ায় বাবা ও মা দুইজনেই শুরু থেকে থাকেন। কিন্তু অল্পদিনের মাঝেই মায়ের উপরে অনেক বেশি দায় দায়িত্ব এসে পড়ে। ৯ মাস ধরে একজন হবু মায়ের শারীরিক এবং মানসিক যে পরিবর্তন হয় তা মোটামুটি অতি মানবীয় বলা যায়। প্রতিটা সপ্তাহ, প্রতিটা দিন অন্য রকম মনে হতে থাকে। নিজের সন্তানের মুখটা দেখার জন্য অনেক কষ্ট হাসিমুখে সহ্য করতে থাকে একজন মা। প্রসবের সময় যে পরিমাণ যন্ত্রণা সহ্য করেও বাচ্চার মুখ দেখলে হেসে ওঠে তা শুধুমাত্র একজন অতি মানবীয় ক্ষমতার অধিকারীর পক্ষে সম্ভব।

সুপার গার্ল হলেও এ সময়ে হরমোন এবং অন্যান্য শারীরিক পরিবর্তনের জন্য মায়েদের মন বিক্ষিপ্ত থাকে। আকাশের মেঘের মতোই মনের আবহাওয়া পরিবর্তিত হতে থাকে। এই আনন্দ, এই দুঃখ, এই হতাশা এসব কিছুতেই সময় কাটে থাকে একজন হবু মায়ের। আর একজন হবু মা কেমন আছে, কিভাবে সময় কাটাচ্ছে তার উপরে অনেকটুকুই নির্ভর করে বাচ্চার স্বাস্থ্য এবং ভবিষ্যৎ কেমন হবে। তাই মা ও শিশু দুজনের কথা চিন্তা করে এ সময় মায়েদের প্রয়োজন আলাদা সুযোগ সুবিধা।

আমরা জানি মেয়েরা বা মায়েরা আবেগি হয়। গর্ভকালীন সময়ে তাদের আর আরেকটাকে আরেকটু ভালো করে বোঝা প্রয়োজন। তাদের নিয়মিত সময় দেন, হবু মায়ের সঙ্গে গল্প করুন, পারিবারিক সামাজিক এবং আপনার নানান কিছু নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করুন, সময় সুযোগ থাকলে তাদের নিয়ে বাইরে বেড়াতে যান, ডাক্তার দেখানোর চেষ্টা করুন যতটুকু পারা যায়, মাতৃত্ব ও প্রসব নিয়ে তাদের মন থেকে ভয়টা কাটানোর চেষ্টা করুন, এবং অবশ্যই প্রসবকালীন নানান জটিলতা নিয়ে আগে থেকেই সচেতন হোন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। বিশেষ করে রক্ত এবং অন্যান্য অনুষঙ্গ আগে থেকে জোগাড় করে রাখুন। শুধু জোগাড় করে রাখবেন না, তাদের জানতেও দিন যে পুরো পরিবার প্রস্তুত রয়েছে। তাদের বুঝতে দেন এ সময় টা তাদের জন্য অন্য রকম একটা সময়। এ সময়টা হবু মা-এর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় গুলোর একটি।

হবু মায়েদের পাশে থাকুন, বোঝার চেষ্টা করুন কি অসম্ভব রকমের সুন্দর সময় পার করছে তারা। বুঝতে চেষ্টা করুন একটা বাচ্চা কিভাবে একটু একটু করে বড় হয়ে উঠছে। কিছুদিন পরেই সেই বাচ্চা দুনিয়াতে এসে আপনাদের কোল আলোকিত করবে। একজন পুরুষের পক্ষে অনুভব করা সম্ভব নয়, একটা মানুষের মায়ের পেটে বড় হয়ে ওঠা। কিন্তু একজন পুরুষ চাইলে খুব কাছ থেকে বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারে। যে পুরুষ যত বেশি উপলব্ধি করতে পারে সে ততো বেশি সুপারম্যান।

মায়ের যত্ন নিন, দেখুন কিভাবে তারা সুপারওম্যান হয়ে ওঠে। উপলব্ধি করুন মাতৃত্ব, অনুভব করুন নিজের পিতা উঠার সময়টা। ওয়ান্ডার ওম্যান এর সাথে সময় কাটিয়ে নিজেকে সুপারম্যান এর জায়গায় নিয়ে যান।‌

হবু মায়েরা বুঝতে চেষ্টা করুন আপনার উপরে নির্ভর করবে আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ। নিজেকে এর উপযুক্ত করে গড়ে তুলুন। নিজের ভেতরের সুপার পাওয়ার অনুভব করুন। মনে রাখবেন, সব মা-ই সুপার মম।

সব মায়েরাই সুপার গার্ল, ওয়ান্ডার ওম্যান